গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার গুণ

নবম-দশম শ্রেণি (দাখিল) - পৌরনীতি ও নাগরিকতা - রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থা | | NCTB BOOK
3

গণতন্ত্রের অনেক ভালো দিক রয়েছে । নিচে গণতন্ত্রের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গুণ আলোচনা করা হলো ।
১. ব্যক্তিস্বাধীনতার রক্ষাকবচ : গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনগণ স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে পারে। সরকারের সমালোচনা করতে পারে । প্রতিনিধি নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিচালনায় অংশগ্রহণ করতে পারে । ফলে ব্যক্তিস্বাধীনতার বিকাশ ঘটে এবং নাগরিকের অধিকার রক্ষা হয় ।
২. দায়িত্বশীল শাসন : এ ব্যবস্থায় শাসকগণ জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে জনগণের নিকট দায়ী থাকে । তারা পরবর্তী নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য জনস্বার্থমূলক কাজ করার চেষ্টা করে। ফলে দেশে দায়িত্বশীল শাসন প্রতিষ্ঠিত হয় ।
৩. সরকারের দক্ষতা বৃদ্ধি : গণতন্ত্রে জনগণের আস্থার উপর সরকারের স্থায়িত্ব নির্ভর করে। ফলে জনগণের আস্থা লাভের জন্য সরকার সততার সাথে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করে। এর ফলে সরকারের দক্ষতা বৃদ্ধি পায় ।
8. সাম্য ও সমঅধিকারের প্রতীক : গণতন্ত্রে সবাই সমান। এতে জাতি, ধর্ম, বর্ণ ইত্যাদি নির্বিশেষে সবাই সমান সুযোগ বা অধিকার ভোগ করে এবং সবাই সমানভাবে রাষ্ট্রের কাজে অংশগ্রহণ করতে পারে।
৫. নাগরিকের মর্যাদা বৃদ্ধি : গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই রাষ্ট্র পরিচালনা করে ।
নির্বাচনের মাধ্যমে সব নাগরিকের রাষ্ট্রের কাজে অংশগ্রহণের সুযোগ থাকায় তারা নিজেদের গুরুত্ব
উপলব্ধি করতে পারে । এতে তাদের মধ্যে দেশাত্মবোধ সৃষ্টি হয় এবং ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটে ও মর্যাদা
বৃদ্ধি পায় ।
৬. যুক্তি ও সম্মতির উপর প্রতিষ্ঠিত : গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা জনগণের সম্মতির উপর প্রতিষ্ঠিত। কাজেই গণতন্ত্রে শক্তি প্রয়োগ বা জোর করে কিছু করার সুযোগ নেই বরং জনগণের ইচ্ছা এবং যুক্তি প্রাধান্য পায় ।
৭. রাজনৈতিক শিক্ষা লাভ : গণতন্ত্রে রাষ্ট্রের শাসনকার্যে অংশগ্রহণের সুযোগ থাকায় নাগরিকগণ জটিল রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে চিন্তা করার সুযোগ পায়। নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্য শুনে তাদের রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি পায় ।
৮. বিপ্লবের সম্ভাবনা কম : গণতন্ত্র নমনীয় শাসনব্যবস্থা। জনগণ ইচ্ছে করলে শান্তিপূর্ণ উপায়ে নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সরকার পরিবর্তন করতে পারে । ফলে এখানে বিপ্লবের সম্ভাবনা কম থাকে ।

Promotion